নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধিতার ধরণ:
শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধিগত, বিকাশগত, ইন্দ্রিয়গত ক্ষতিগ্রস্থতা ও প্রতিকূলতার ভিন্নতা বিবেচনায় চার ধরণের নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধিতাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
১। অটিজম বা অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারস:
অটিজম বা অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশের এমন একটি জটিল প্রতিবন্ধকতা যা শিশুর জন্মের দেড়বছর হতে তিন বছরের মধ্যে প্রকাশ পায়। এ ধরণের প্রতিবন্ধি ব্যক্তিদের সাধারণত: শারীরিক গঠনে কোন সমস্যা বা ত্রুটি থাকেনা এবং তাদের চেহারা ও অবয়ব অন্যান্য সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষের মতোই হয়ে থাকে। তারা পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিকতার সাথে যথাযথভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতে পারেনা, যেমন- ভাষার ব্যবহার আয়ত্ব করতে না পারা একই ধরণের বা সীমাবদ্ধ কিছুকাজ বা আচরণের পুনরাবৃত্তি, অতিরিক্ত চঞ্চলতা, একই রুটিনে চলার প্রচন্ড প্রবণতা, অন্তর্মুখী হয়ে থাকা ইত্যাদি। তবে, অনেক ক্ষেত্রে ছবি আঁকা, গান করা, কম্পিউটার পরিচালনা বা গাণিতিক সমাধানসহ অনেক জটিল বিষয়ে এ ধরণের ব্যক্তিরা বিশেষ পারদর্শী হয়ে থাকে।
২। ডাউন সিনড্রোম: কোন ব্যক্তির মধ্যে এরূপ কোন বংশানুগতিক (Genetic) সমস্যা যা ২১তম ক্রোমোসোম জোড়ায় একটি অতিরিক্ত ক্রোমোসোমের সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং মৃদু হতে গুরুতর মাত্রার বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা, দুর্বল পেশী ক্ষমতা, খর্বাকৃতি ও মঙ্গোলয়েড মুখাকৃতি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ব্যক্তি ডাউন সিনড্রোম প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত হন।
৩। বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা: বয়স উপযোগী কার্যকলাপে সীমাবদ্ধতা, বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যকলাপে সীমাবদ্ধতা, যেমন- কার্যকারণ বিশ্লেষণ, শিক্ষন বা সমস্যা সমাধান এবং দৈনন্দিন কাজের দক্ষতার সীমাবদ্ধতা যেমন- যোগাযোগ, নিজের যত্ন নেওয়া, সামাজিক দক্ষতা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা, লেখাপড়া, নিজেকে পরিচালনা করা এ ধরণের এক বা একাধিক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী যেকোন ব্যক্তি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হন।
৪। সেরিব্রাল পালসি: প্রসবকালীন সময়ে দীর্ঘ সূত্রিতার ফলে মস্তিষ্কে আঘাতজনিত কারণে সাধারণত এরূপ শিশুর চলাফেরা ও দেহ ভঙ্গিতে অস্বাভাবিকতা দেখা যায়। ফলে দৈনন্দিন কার্যক্রম সীমাবদ্ধতার ফলে তিনি সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত হন।